২০২৫ সালে টিক টক ও ইনস্টাগ্রাম এ ভাইরাল ফ্যাশন ট্রেন্ড বিশ্লেষণ
টিক টক আর ইনস্টাগ্রাম এখন শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং তরুণ প্রজন্মের ফ্যাশন অনুপ্রেরণার অন্যতম উৎস। এই প্লাটফর্ম গুলোতে প্রতিদিন বদলে যাচ্ছে ফ্যাশনের ভাষা ও এস্টাইল ট্রেন্ড।
এই ফ্যাশন ট্রেন্ডগুলো শুধু লোক নয়, বরং তরুণদের আত্মপ্রকাশ এর হাতিয়ার হয়ে
উঠেছে। তাই চলুন বিশ্লেষণ করি ২০২৫ সালের সবচেয়ে আলোচিত ফ্যাশন ট্রেন্ডগুলো এবং
ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ট্রেন্ড বিশ্লেষণ।
পেজ সূচিপত্রঃ ২০২৫ সালে টিক টক ও ইনস্টাগ্রাম এ ভাইরাল ফ্যাশন ট্রেন বিশ্লেষণ নিয়ে ৭টি টপিক আলোচনা
টিক টক ও ইনস্টাগ্রামে ফ্যাশনের প্রভাব
টিক টক ও ইনস্টাগ্রাম আজকের তরুণ প্রজন্মের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই দুটি
প্ল্যাটফর্ম শুধু বিনোদনের জায়গা নয়, বরং নতুন নতুন ফ্যাশন ট্রেন ছড়িয়ে পড়ার
অন্যতম প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এখানে একজন সাধারণ ব্যবহারকারীও তাদের স্টাইল
এবং পোশাকের মাধ্যমে মুহূর্তের লক্ষ মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে।
ফ্যাশন ট্রেন্ডের জন্মস্থলঃ, টিকটক ও instagram এ প্রতিদিন হাজারো বিল ভিডিও
ও ছবি আপলোড হয়। এই কন্টেন্ট গুলোর মাধ্যমে নতুন ফ্যাশন ট্রেন্ড তৈরি হয়-যেমন,
গ্রুপ টপ বেগী প্যান্ট মেট্রো চশমা বা এক্স টু কে স্টাইল। অনেক সময় অজানা
ব্র্যান্ডো এই মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
ইনফ্লুয়েন্সার ও কনটেন্ট ক্রিকেটারদের প্রভাবঃ ফ্যাশন ইন প্লেন স্যাররা এখন
ব্র্যান্ডের প্রতিনিধি। তারা তাদের সাজ প্রসাদ হেয়ার স্টাইল এবং মেকআপ লুক দিয়ে
কোটি কোটি ফলোয়ারদের প্রভাবিত করেন। একেক জন ইনফ্লেন্সার একটি ট্রেন্ড শুরু করলে
তা ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগে না।
লোকাল টু গ্লোবাল ফ্যাশনঃ এই প্লাটফর্ম গুলোর মাধ্যমে স্থানীয় ফ্যাশন ধারা
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। যেমন ঢাকায় জামদানি বা রাজশাহীর সিল্ক এখন
আন্তর্জাতিক দর্শকের কাছে পরিচিত হচ্ছে রিলস বা রিলসএর মাধ্যমে।
কাস্টমার চয়েসে পরিবর্তনঃ মানুষ এখন ফ্যাশন ব্র্যান্ড বেছে নেয়
ইনফ্লুয়েন্সারদের সাজেশন দেখে। কেউ নতুন ড্রেস কিনতে গেলে আগে দেখে কাকে সেটা
পড়তে দেখা গেছে। ব্র্যান্ডগুলো তাই ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং গুরুত্ব দিচ্ছে।
ট্রেন্ড অনেক বেশি গতিশীলঃ আগে ফ্যাশনের ধারা একবার তৈরি হলে তার দীর্ঘদিন
চলতো। এখন সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে ফ্যাশন অনেক বেশি গতিশীল-এক সপ্তাহে যা
ট্রেন্ডি পরের সপ্তাহে তা পুরনো।
বর্তমান ভাইরাল ফ্যাশন ট্রেন্ড
২০২৫ সালে টিক্টক ও ইন্সট্রাগ্রাম এ ফ্যাশনের যে রূপ আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা আগের
যেকোনো সময় তুলনায় বেশি বৈচিত্র্যময় ও গতিশীল। প্রতি দিনই নতুন কিছু্ ট্রেন
তৈরি হচ্ছে এবং পুরনো ট্রেনগুলো নতুন আঙ্গিকে ফিরে আসছে। এখানে কিছু উল্লেখযোগ্য
ভাইরাল ফ্যাশন ট্রেন বিশ্লেষণ করা হলো।
ওয়াই টুকে স্টাইলে ফিরে আসাঃ দুই হাজার সালের শুরুর দশকে জনপ্রিয় ছিল যে
গ্ল্যামার ও ফানকি স্টাইল , তা আবার ফিরে এসেছে নতুন রূপে। গ্রুপ ক্রপ টপ,লো রাইজ
জিন্স, চকচক মেকআপ বেরঙের ব্যাগ-সবকিছুই এখনকার তরুণ প্রজন্মের মধ্যে
ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় এবং এই স্টাইল নস্টালজিয়া মিক্সড উইথ মডার্ন ধারণাকে তুলে
ধরে।
মিনি মাল লিস্ট লুকঃ টিক টক ও ইনস্টাগ্রামে এখন মিনিমালিস্ট ফ্যাশনেরও তুমুল
চর্চা চলছে।, সিম্পল কাঠের জামা ন্যাচারাল মেকআপ এগুলো এখন স্টাইল স্টেটমেন্ট
হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে Gen-Z ও তরুণী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে এই
ট্রেন বেশ জনপ্রিয়।
রঙ্গিন এক্সপেরিমেন্ট ও রেট্র থিমঃ রিল ও ভিডিও দেখতে পাচ্ছি বোল্ড রঙ্গের
জাম্পস্যুট পলকা ডট ফ্লোরাল প্রিন্ট রেট্র স্টাইলের চশমা আবার ফিরে এসেছে।
এই ধরনের স্টাইল কে ডোপামিন ড্রেসিং বলা হয়। কারণ এতে রং ও আনন্দের প্রকাশ থাকে
স্পষ্ট।
জেন্ডার নিউট্রাল ফ্যাশনঃ আরেকটি আলোচিত ট্রেন্ড হলো জেন্ডার নিউট্রাল বা
ইউনিসেক্স ফ্যাশন। এখন পুরুষ ও নারীরা একই ধরনের পোশাক পরছেন-যেমন ওভারসাইড
টি শার্ট হুডি ম্যাগি প্যান্ট ইত্তাদি। এই ট্রেন্ড তরুণ প্রজন্মের ইনক্লুসিভ ও
ফ্রি এক্সপ্রেশনকে প্রতিনিধিত্ব করে।
ডি আই ওয়াই ও থ্রিস্ট ফ্যাশনঃ নিজের পোশাক নিজের তৈরি বা পুরনো পোশাক নতুনভাবে
সাজানো-এই ডু ইট ইওর সেলফ এখন ভাইরাল। অনেক ইনফ্লুয়েন্সার পুরনো শার্ট
গেটে নতুন ডিজাইন বানিয়ে তা ভিডিওতে তুলে ধরছেন।
ইনফ্লুয়েন্সারদের ভুমিকা ও ট্রেন্ড সেটিং
বর্তমান ফ্যাশন জগতে ইন ফিল্মেন্সারদের গুরুত্ব অপরিসীম।, তারা শুধুমাত্র পোশাক
পরেন না তারা নতুন ফ্যাশন স্টেটমেন্ট তৈরি করেন। ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকে ইন
প্ল্যান্সাররা তাদের রিল ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে যে লোক তৈরি করেন তার লক্ষ লক্ষ
মানুষ অনুসরণ করে। তারা এখনকার ডিজিটাল যুগে ফ্যাশনের পথপ্রদর্শক।
কন্টেন্টের মাধ্যমে ব্র্যান্ড প্রমোশনঃ অনেক ফ্যাশন ব্র্যান্ড এখন আর প্রচলিত
বিজ্ঞাপন বা ক্যাটালগে নির্ভর করে না। তারা ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে তাদের
পোশাক ও অ্যাক্সেসরিজ প্রমোট করে। যখন একটি নতুন ড্রেস পড়েন বা কোন নতুন কালেকশন
নিয়ে ভিডিও করেন, তখন তারাও সেই পণ্য সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠে।, এতে করে সেই
ট্রেন্ডও ভাইরাল হয়।
স্টাইল আইকনদের অনুসরণঃ কিছু ইনফ্লুয়েঞ্জার এখন পুরো প্রজন্মের স্টাইল আইকন।
তাদের প্রতিদিন কাল সাজ প্রশাদ হেয়ারস্টাইল এমনকি মেকআপ রুটিন পর্যন্ত অনুসরণ
করে হাজারো তরুণ তরুণী। উদাহরণস্বরূপ এই ইনফ্লুয়েন্সার যদি হুডি আর ব্যাগি
জিন্সের জিল করেন সেটা খুব দ্রুতই একটি ট্রেনে পরিণত হতে পারে।
লোকাল ফ্যাশনকে গ্লোবাল রূপ দেওয়াঃ অনেক ইনফ্লুয়েন্সার স্থানীয় ভাষণকে
যেমন জামদানি, ব্লক প্রিন্ট বা হ্যান্ডমেড এক্সেসরিজকে তুলে ধরেছেন। বাংলার
ঐতিহ্যবাহী ফ্যাশন ও।
রেন্ডি সেটিং ও এক্সপেরিমেন্টঃ ইনফ্লুয়েঞ্জারা অনেক সময় প্রচলিত স্টাইল থেকে
বেরিয়ে এসে নতুন ধরনের লুক তৈরি করেন। তারা ফ্যাশনে এক্সপেরিমেন্ট করেন,-মিশ্রণ
ঘটান যেমন ট্রেডিশনাল ও ওয়েস্টার্ন ফ্যাশনের সংমিশ্রণ বা গ্ল্যাম ও মিনিমালটিস্ট
লুক একসাথে তুলে ধরেন।
রিয়েল টাইম রেস্পন্সঃ ইনফ্ল্যান্সারদের পোস্টে তাৎক্ষণিক কমেন্ট, রিএকশন
শেয়ার পাওয়া যায্ যার ফলে তারা জানেন কোন ট্রেন্ডে দর্শকদের সারা কেমন। সেই
অনুযায়ী তারা পরবর্তী কনটেন্ট তৈরি করেন এবং ট্রেন্ডে প্রভাব ফেলেন।
ভবিষ্যতের ফ্যাশন দৃষ্টিভঙ্গি
ফ্যাশন কখনোই স্থির থাকে না। এটি সমাজ প্রযুক্তি পরিবেশ ও সংস্কৃতির সঙ্গে তাল
মিলিয়ে পরিবর্তিত হয়। ২০২৫ সালের পরবর্তী ফ্যাশন ট্রেনগুলো আরো বেশি প্রযুক্তি
নির্ভর পরিবেশবান্ধব এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সোসাল মিডিয়ার
ত্বরান্বিত প্রভাবের পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের চাহিদাও ভবিষ্যতের ফ্যাশন গভীর ছাপ
ফেলবে।
প্রযুক্তি নির্ভর ফ্যাশনের উত্থানঃ অল আর্টিফিশিয়াল ও এয়ার আর্গুমেন্টেড
রিয়ালিটি প্রযুক্তি এখন ফ্যাশনের অংশ হয়ে উঠেছে। ভার্চুয়াল ট্রাই অন ডিজিটাল
পোশাক ও ফ্যাশন ফিল্টার এখন অনেক ব্র্যান্ড ও ইনফিলেন্সার ব্যবহার করছেন।
ভবিষ্যতে মানুষ বাস্তবে না পরে ভার্চুয়ালি স্টাইলিং করবে-বিশেষ করে কনটেন্ট এর
জন্য। এতে সময় বাঁচবে ও পোশাক অপচয় কমবে।
টেকসই ফ্যাশনঃ পরিবেশগত অবস্থা দেখে ভবিষ্যতের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি আরও বেশি
পরিবেশবান্ধব হবে। হবে। রিসাইকেল যোগ্য জৈব কাপড়ে এবং ইথিক্যাল প্রোডাকশন মডেল
আরও জনপ্রিয় হবে। ব্র্যান্ডগুলো কার্বন ফুট ক্রিম কমানোর দিকে গুরুত্ব দিবে এবং
গ্রাহকরাও স্লো ফ্যাশন ধারণাকে গুরুত্ব দেবে।
ভার্চুয়াল ফ্যাশন ও ডিজিটাল কালেকশনঃ, ফ্যাশন শো গুলো ধীরে ধীরে
ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে চলে যাচ্ছে। থ্রিডি ফ্যাশন ডিজাইন ও মেটাভার ফ্যাশন শো এখন
বাস্তবতা।। ভবিষ্যতে ফ্যাশন কালেকশন অনেকটাই অনলাইন নির্ভর হবে, যেখানে
ডিজাইনাররা ভার্চুয়ালি পোশাক উপস্থাপন করবেন।
ইনক্লুসিভ ফ্যাশনঃ ফ্যাশন হবে সবার জন্য-সব বয়স আকার লিঙ্গ এবং সংস্কৃতির জন্য
না সমানভাবে উপযোগী। ভবিষ্যতের ফ্যাশন শুধু বিউটি স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে চলাফেরা
করবে না বরং ব্যক্তিত্ব ও স্বাচ্ছন্দকে অগ্রাধিকার দিবে।
কাস্টমাইড ফ্যাশনঃ আগামী দিনে ফ্যাশন হবে আরও পার্সোনাল লাইট। । এ আই বিশ্লেষণ
করে বুঝবে কে কি ধরনের পোশাক পছন্দ করে, এবং সেই অনুযায়ী সাজেস্ট করবে স্টাইল বা
কালেকশন। এতে করে সবাই নিজস্ব স্টাইল কে আরো সহজে গড়ে তুলতে পারবে।
ফ্যাশনের পরিবর্তন ও প্রভাব
ফ্যাশনের পরিবর্তন মূলত সময় সংস্কৃতি প্রযুক্তি অর্থনীতি অবস্থা ও সামাজিক
দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে. ফ্যাশনের কখনো একটি প্রবণতা হিসাবে আসে, আবার কখনো
সামাজিক বার্তা বহন করে.
সময়ের সঙ্গে ফ্যাশনে পরিবর্তনঃ ১৯৪০ - ৫০ দশ দশক যুদ্ধকালীন ও পরবর্তী সময়ে
সাধারণ ও ব্যবহারিক পোশাক বেশি জনপ্রিয় ছিল।
১৯৬০-৭০ দশকঃ হিপি ও বোহেমিয়ান স্টাইলের প্রভাব উজ্জ্বল রং ও ফ্লেয়ার
প্যান্ট জনপ্রিয় হয়।
১৯৮০-৯০ দশকঃ গ্ল্যামার ও কালচারের প্রভাবে উজ্জ্বল।
২০০০- বর্তমানঃ মিনিমালিজম সাস্টেইনেবল ফ্যাশন ও ডিজিটাল ইনফ্লুয়েন্সের এর
যুগ।
প্রযুক্তির প্রভাবঃ ডিজিটাল মিডিয়া সোশ্যাল মিডিয়া ও ই-কমার্স ফ্যাশনের
ব্যবহারকে প্রবাহকে দ্রুততর করেছে। এখন ট্রেন্ড তৈরি হয় ইনেস্ট্রাগ্রাম বা টিক
টক এ আর তা তাৎক্ষণিকভাবে বৈশ্বিকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
ফ্যাশনের প্রভাবঃ এটি সমাজ ও ব্যক্তিজীবনের উপর বড় প্রভাব ফেলে।
সামাজিক প্রভাবঃ ফ্যাশনের মানুষের আত্মপরিচয় ও আত্মবিশ্বাসের প্রকাশের
মাধ্যম।
এটি সমাজে একটি শ্রেণীভেদ বা স্ট্যাটাস তৈরি করতে পারে।
বিভিন্ন সংস্কৃতির ফ্যাশন অন্য সংস্কৃতিতে জনপ্রিয় হয়ে আন্তঃসংস্কৃতিক বিনিময়
ঘটায়।
অর্থনৈতিক প্রভাবঃ হ্যাঁ শোন ইন্ডাস্ট্রি একটি বিশাল বাজার চাকরি ব্যবসা ও
রপ্তানির উৎস।
ফাস্ট ফ্যাশনের কারণে অল্প খরচে ট্রেন্ডি পোশাক মিলছে। কিন্তু এটি শাস্ত্রী
নাবিলিটির জন্য হুমকি।
পরিবেশগত প্রভাবঃ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি পরিবেশ দূষণের অন্যতম বড় উৎস।
সাস্টিনেবল বা পরিবেশবান্ধব শাসনের দিকে এখন মনোযোগ বাড়ছে।।
যা মানুষের চিন্তা ভাবনা জীবন যাপন ও সংস্কৃতিতে প্রতিফলিত করে। ফ্যাশনের
পরিবর্তন যেমন আমাদের রুচি ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সাক্ষী, তেমনি এর প্রভাব আমাদের
অর্থনীত্ সমাজ ও পরিবেশ ও পড়ে। তাই প্রয়োজন সঠিক সচেতনতা ও দায়িত্বশীল ফ্যাশন
গ্রহণ।
ইন্সত্রাগ্রাম ও সোশ্যাল মিডিয়ার ফ্যাশনের প্রভাব
Instagram ও সোশ্যাল মিডিয়ার ফ্যাশনের প্রভাব বিষয়টি বর্তমান যুগে অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষ করে ইন্সট্রাগ্রাম এখন শুধু ছবি শেয়ার করার
প্ল্যাটফর্ম নয়-এটি ফ্যাশন ট্রেন্ড তৈরি ও ছড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম প্রধান মাধ্যম
নিচে এর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ইন্সট্রাগ্রাম ও সোশ্যাল মিডিয়ার ফ্যাশনের প্রভাবঃ ফ্যাশন ট্রেন্ডের
দ্রুত বিস্তারঃ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি নতুন স্টাইল পোশাক বা সাতশোজা ভাইরাল হতে
মাত্র কয়েক ঘন্টা লাগে। এই সময় যেখানে ফ্যাশন শো ম্যাগাজিন বা সেলিব্রিটিদের
মাধ্যমে ট্রেন্ড ছাড়াতো এখন তা হয় ইনস্টাগ্রাম রিল টিকটক ভিডিও বা ইউটিউব শর্ট
সে রএর মাধ্যমে।
ইন ফিল্মসর ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ভূমিকাঃ ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সাররা এখন
ব্র্যান্ড।
আশ্বাসেডরের মত কাজ করেন।
ছোট বড় অনেক ইন্সুলেন্সার তাদের স্টাইল দিয়ে ফলোয়ারদের উপর বিশাল প্রভাব
রাখে।
মানুষ এখন তাদের পছন্দের ইনফ্লুয়েন্সারদের পোশাক মেকআপ বা স্টাইল কপি করতে
ভালোবাসে।
ব্র্যান্ড ও মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি তে পরিবর্তনঃ বড় বড় ফ্যাশন ব্র্যান্ড এখন
ইনস্টাগ্রামে প্রোডাক্ট লঞ্চ করে।
ইনস্টাগ্রামে ফ্যাশনের ধারণা তৈরি হয়েছে অর্থাৎ যেসব পোশাক বা এক্সেসরিজে ছবিতে
দারুন দেখায়।
এফিলিয়েট মার্কেটিং বা রেস্পন্সরড পোস্ট এর মাধ্যমে ইনফ্লুয়েন্সের রা কোটি টাকা
আয় করছে
ব্যবহারকারীর অংশগ্রহণ ও ব্যক্তিগত স্টাইলের প্রচারঃ সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই
নিজের এসটাইল শেয়ার করতে পারে এতে তৈরি হয় একধরনের গ্লোবাল ফ্যাশন কমিউনিটি।
অনেক নতুন ডিজাইন রা বা ফ্যাশন উদ্যোক্তা সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই পরিচিত
পাচ্ছে।
ট্রেন্ডের চক্র ছোট হয়ে যাওয়াঃ আগে ফ্যাশন ট্রেন্ড স্থায়ী হতো কয়েক বছর এখন
তা সপ্তাহ বা মাসেই বদলে যাচ্ছে।
ফাস্ট ফ্যাশন কনসেপ্টর উত্থান ঘটছে যা পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
ইন্সট্রাগ্রাম ও সোশ্যাল মিডিয়া ফ্যাশন কে গণমাধ্যমের সীমা ছাড়িয়ে দিয়েছে।
এখন একজন সাধারণ মানুষও ফ্যাশন আইকন হতে পারে। তবে এর সঙ্গে দায়িত্বশীলতা পরিবেশ
সচেতনতা এবং আসল সক্রিয়তা ধরে রাখাও জরুরী।
ফ্যাশনের ভবিষ্যৎ ও দায়িত্বশীলতা
ফ্যাশনের ভবিষ্যৎ ও দায়িত্বশীলতা একটি সমসাময়িক ও গভীর ভাবনার বিষয়।
ফ্যাশন জগত প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে, কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ সমাজ ওই
নৈতিকতা নিয়েও ভাবনার সময় এসেছে।নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো।
আসলে ভবিষ্যৎঃ প্রযুক্তি নির্ভর ফ্যাশনঃ ডিজিটাল ফ্যাশন ও ভার্চুয়াল
পোশাকঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ট রিয়ালিটি ও মেয়েটা ভার্সেস ডিজিটাল পোশাক
পরিধানের প্রবণতা বাড়ছে।, বাস্তবে অনলাইনে স্টাইল শেয়ার করা হচ্ছে।
থ্রিডি প্রিন্টিংঃ ফ্যাশন ডিজাইনে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রজেক্টটির ব্যবহার বাড়ছে
যা নতুন ধরনের টেক্সটাইল তৈরি করছে।
পার্সোনালাইজড ফ্যাশনঃ মানুষ এখন চাইছে নিজেদের ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী পোশাক করতে।
তাই অল ট্রেন্ড থেকে বেরিয়ে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং ও স্টাইলিং জনপ্রিয়
হচ্ছে।
লোকাল ও ক্রাফট ভিত্তিক ফ্যাশনের উত্থানঃ স্থানীয় কারিগরি হস্তশিল্প ও
ঐতিহ্যবাহী ডিজাইনগুলোর কদর বাড়ছে। স্লো ফ্যাশন ধারণা এখন মানুষের মধ্যে সচেতনতা
তৈরি করছে।
ফ্যাশনের দায়িত্বশীলতাঃ পরিবেশগত দায়িত্বঃ ফাস্ট ফ্যাশন বিশ্বব্যাপী বর্জ্য ও
কার্বন নিঃসরণের অন্যতম প্রধান উৎস।
সাবস্ক্রাইনেবল ফ্যাশনের দিকে ঝুকছে অনেকে যেখানে পরিবেশবান্ধব উপকরণ নিয়ে কোন
ব্যবহারযোগ্য কাপড় বা ন্যূনতম বর্জ্য তৈরি করা হয়।
জলের অপচয় কমানো জৈব বস্ত্র ব্যবহার ও পরিবেশবান্ধব প্যাকেজিং এখন ফ্যাশন
ব্র্যান্ডগুলোর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
সামাজিক দায়িত্বঃ পোশাক শ্রমিকদের ন্যায্যমজুরি নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং অধিকার
রক্ষা ফ্যাশনে ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম দায়িত্ব।
এখন হেয়ার ট্রেড ক্রাল্টি বা ভেগান ফ্যাশন ট্যাগ ব্যাবহার করছে।
ভোক্তার দায়িত্বঃ আমাদেরকে দায়িত্বশীল ভোক্তা হতে হবে প্রয়োজনীয় পোশাকে না
পুনরায় ব্যবহার করা সঠিকভাবে সাইকেল করা এবং অপ্রয়োজনীয় ট্রেন্ডের পিছনে না
ছোটা।
ইনফিলেন্সার বা সেলিব্রিটি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে না ভেবে কেনাকাটা না করাই
দায়িত্বশীলতার অংশ।
ফ্যাশনের ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি নির্ভর টেকসই ও পার্সোনাল লাইফ হবে। তবে তার সঙ্গে
প্রয়োজন গভীর দায়িত্ববোধ পরিবেশ সমাজ এবং নিজের প্রতি। শুধু সুন্দর দেখানোর
জন্য নয়। ভালো থাকার জন্য ফ্যাশন কে দায়িত্বশীল হতে হবে।
পরিশেষে আমি যে ২০২৫ সালে টিকটক ও ইন্সট্রাগ্রাম এ ভাইরাল ফ্যাশনাল ট্রেন্ড
বিশ্লেষণ করেছি ।সেই সম্পর্কে আপনাদের মতামত চাই এবং কোন টপিকটি আপনাদের কাছে
ভালো লেগেছে সেই টপিক সম্পর্কে মন্তব্য করুন এবং আমার এই লেখা আপনাদের কাছে যদি
ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাকে লাইক কমেন্ট দিয়ে জানাবেন ।আর আপনাদের বন্ধু
বান্ধবী ও পরিচিতিদের মাঝে জানিয়ে দিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url